গুজরাটি অলাবু শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে অলাউ এবং
সর্বশেষ লাউ শব্দে পরিণত হয়েছে। লাউ বললে সবাই চেনে। খুবই জনপ্রিয় সবজি এই লাউ। আয়ুর্বেদ
মতে, দু'টি সবজির কোনো অপকারিতা নেই। এ দুটো হলো পেঁপে ও লাউ। এ দুটো সবজি ভাজা, রান্না,
কাঁচা, পাকা যেভাবে খাওয়া হোক না কোনো অপকার করে না। শোনা যায়, ইউনুস নবী মাছের পেট
থেকে মুক্তি পেয়ে বহু দিন এক লাউয়ের জাংলার নিচে ছিলেন এবং কাঁচা লাউ চিবিয়ে খেয়ে বেঁচে
ছিলেন। আমাদের মধ্যে অনেক বুড়ো মানুষ এখনো কচি লাউ লবণ মিশিয়ে কাঁচা চিবিয়ে খান। এতে
নাকি শরীর ও পাকস্থলী দুটোই ঠাণ্ডা থাকে।
লাউ লম্বা ও গোল দুই প্রকারই হয়। ভারত ও বাংলাদেশের
সর্বত্র লাউয়ের চাষ হয়। ব্যবসায় ভিত্তিতে কৃষক জমিতে চাষ করেন। সাধারণ লোক বাড়ির আঙিনায়
দু-তিনটি বীজ পুঁতে দিয়ে গাছ ঘরের চালে তুলে দেয়। চালে লতিয়ে চলে অনেক ডগা বের করে।
লাউগাছের গোড়ায় পচা জৈবসার দিয়ে প্রতিদিন পানি ঢালতে হয়। লাউয়ের ফুল সাদা। লাউয়ের পাতা,
ডগা, বীজ সবই ভেষজ গুণসমৃদ্ধ।
প্রয়োগ ও ব্যবহার
পিত্তশ্লেষ্মাজনিত জ্বরে : জ্বরের সাথে গায়ে জ্বালা, বমি বমি ভাব হলে লাউ
আগুনে ঝলসে তিন-চার চামচ রস বের করে আধা চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়ালে গায়ের জ্বালা ও বমি
বমি ভাব দূর হয়।
শ্বেতিরোগে : সদ্য শ্বেতি দেখা দিলে আক্রান্ত স্থানে লাউ
ফুল রগড়ে লাগালে ভালো হয়। তবে পুরনো বা বহুদিন হলে কাজ হয় না।
অর্শরোগে : অর্শরোগীর যদি পায়খানা না হয়, মলদ্বার দিয়ে
ফোঁটায় ফোঁটায় রক্ত পড়ে এবং মলত্যাগ করলেও পেট পরিষ্কার না হয়; তবে লাউ ঝলসে নিয়ে
নিংড়ে রস বের করে সামান্য চিনি মিশিয়ে খাওয়ালে সমস্যা চলে যায়।
চোখে ছানি পড়লে : শুধু যাদের চোখে ছানি পড়া শুরু হয়েছে, তারা
প্রতিদিন সকালে লাউ ফুল চিপে রস বের করে চোখে ফোঁটা দিলে ছানি আর বাড়বে না। যাদের বেড়ে
গেছে, তাদের বেলায় কোনো কাজ হবে না।
পায়োরিয়া রোগে : যাদের দাঁতে পায়োরিয়া সমস্যা আছে, তারা লাউ
ঝলসে নিয়ে রস বের করে ১০ মিনিট মুখের ভেতর রেখে ফেলে দেবে। ১০ দিন এই নিয়ম অনুসরণ করলে
পায়োরিয়া ভালো হয়ে যায়।
মেছতা রোগে : যাদের মুখমণ্ডলে মেছতা বা দাগ হয়েছে, তারা প্রতিদিন
এক টুকরো লাউ ঝলসে নিয়ে মুখে ঝষলে দাগ উঠে যাবে। সূত্র: হেলথ মেগাজিন, মার্চ ২০১৪।
No comments:
Post a Comment