i-Health News

Health News Update

Breaking

Saturday, November 23, 2013

অনিয়মিত হৃদস্পন্দন



সুস্থ মানুষের হৃৎপিণ্ড স্বাভাবিক অবস্থায় সুন্দর একটি তালে চলে, এই তালকে হৃদস্পন্দন বলে। যদি কোনো কারণে এই তালে বেতাল ঘটে বা হৃৎপিণ্ড এলোমেলোভাবে চলে অথবা থেমে থেমে কিংবা খুব দ্রুত বা খুব আস্তে চলে, তাকে অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বলে। প্রতিবার হৃৎপিণ্ড সংকোচন শুরু করার পূর্বে একটি বৈদ্যুতিক সংকেতের প্রয়োজন হয়। এই বৈদ্যুতিক সংকেত হৃৎপিণ্ডের একটি নির্দিষ্ট অংশ থেকে উৎপত্তি হয়ে থাকে, যাকে পেসমেকার বলা হয়। সাধারণভাবে বলা যেতে পারে, প্রায় সব ক্ষেত্রেই বৈদ্যুতিক সংকেতের ত্রুটির কারণেই অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হয়ে থাকে।

অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের প্রকারভেদ
চার ধরনের অনিয়মিত হৃদস্পন্দনই বেশি পরিলক্ষিত হয়।

প্রিম্যাচুর বিট/ড্রপবিট
যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এ ধরনের অনিয়মিত হৃদস্পন্দনে নাড়িতে হঠাৎ করে একটি বিট মিস হয়ে থাকে, অনেক সময় রোগী নিজেই এটা বুঝতে পারে। এটা প্রায় সময় ক্ষতিকর বলে বিবেচিত হয় না। তবে যদি খুব বেশি ঘনঘন হতে থাকে তাহলে এ থেকে বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ হতে পারে, যেমন-দুর্বল লাগা, মাথা ঘোরা, বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি। এতে রোগী উৎকন্ঠিত এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হতে পারে, সবল মানুষেও এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

সুপ্রাভেন্ট্রিকুলার টেকিকার্ডিয়া
এক ধরনের অনিয়মিত হৃদস্পন্দন। এক্ষেত্রে হঠাৎ হৃৎপিণ্ডের গতি বৃদ্ধি পায় বা হৃৎপিণ্ড খুব দ্রুতগতিতে চলতে থাকে, রোগীর বুক ধড়ফড় করা, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট, অস্থিরতা, শরীর ঘেমে যাওয়া, কখনো কখনো বুকে ব্যথা অনুভূত হওয়া এমনকি খুব মারাত্মক অবস্থায় রোগী অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে। কোনো রকম চিকিৎসা ছাড়াই কিছুক্ষণ পর এসব উপসর্গ দূরীভূত হয়ে যেতে পারে এবং রোগী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।

ভ্যানট্রিকুলার অনিয়মিত হৃদস্পন্দন
এটা দু’ধরনের হয়ে থাকে। ভ্যানট্রিকুলার টেকিকার্ডিয়া ও ভ্যানট্রিকুলার ফিব্রিলেশন মারাত্মক ধরনের অনিয়মিত হৃদস্পন্দন যার ফলে মানুষ প্রায়ই মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। হার্ট অ্যাটাক এ ধরনের অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের অন্যতম কারণ। কখনো কখনো খুব বেশি ভয় পাওয়া, ইলেকট্রিক শক, হঠাৎ দুর্যোগে পতিত হওয়ার জন্য এ অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হতে পারে।

হৃৎপিণ্ডের গতি কমে যাওয়া
হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন বা নাড়ির গতি প্রতি মিনিটে ৬০ বার এর চেয়ে কমে আসাকে ব্রেডিকার্ডিয়া বলে। এর অন্যতম কারণ হার্ট অ্যাটাক। অন্যান্য কারণের মধ্যে বার্ধক্যজনিত কারণ, হার্ট ব্লক, থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের সমস্যা, রক্তে লবণ পানির ভারসাম্য নষ্ট হওয়া এবং বেশ কিছু মেডিসিনের প্রভাবে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। উপসর্গ হিসেবে খুব দুর্বলতা অনুভব হওয়া, মাথা ঘোরা বা মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়া। শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে ও ক্ষেত্রবিশেষে রোগীর খিঁচুনি এবং মারাত্মক অবস্থায় রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৭ জুলাই ২০১৩।

No comments:

Post a Comment