যারা
ডায়াবেটিস নামক দুরারোগ্য রোগে ভুগে, তাদের খাদ্য সচেতন হতে হয়। খাওয়া-দাওয়ায় তাদের
অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে। সবকিছু খেতে পারেন, কিন্তু পরিমাণমতো এবং চিকিৎসকের পরামর্শ
মোতাবেক। কেউ কেউ বলেন, কোনো মিষ্ট ফল খাওয়া চলবে না। কথাটা সর্বাংশে সত্য নয়। খাওয়া
যাবে তবে পরিমাণমতো। গবেষকেরা বলছেন, ডায়াবেটিস রোগীরা যদি ফলের রস পান করেন, তবে ডায়াবেটিসের
ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু যদি ফল চিবিয়ে খাওয়া হয় তাহলে ডায়াবেটিস কমে এবং যারা এখনো আক্রান্ত
হননি তাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
হার্ভার্ড
স্কুল অব পাবলিক হেলথের একদল গবেষক দীর্ঘ দিন গবেষণা করে উল্লিখিত কথার সত্যতা খুঁজে
পেয়েছেন। তারা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ওপর ফলের প্রভাব নিয়ে দীর্ঘ দিন গবেষণা করে এ কথার
সত্যতা পেয়েছেন।
ডায়াবেটিস
টাইপ-২ এর জন্য উপকারী ফল হলো কালোজাম, আঙুর, আপেল ও নাশপাতি। এসব ফল যদি চিবিয়ে খাওয়া
হয় খোসাসমেত তাহলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা কমে। কিন্তু যদি শুধু রস বা জুস বের
করে খাওয়া হয়, তবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। যুক্তরাজ্যের দ্য
ইনডিপেন্ডেন্ট পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সপ্তাহে তিনবার যদি
পর্যাপ্ত পরিমাণে কেউ কালোজাম খায় তাহলে তার টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা
২৬ শতাংশ কমে। আর যদি জুস বা রস বের করে পান করে তবে আট শতাংশ ঝুঁকি বাড়তে পারে। সব
ফলের বেলায় এ কথা প্রযোজ্য নয়। কিছু কিছু ফলের বেলায় কম-বেশি হতে পারে। যেমন-আঙ্গুর
খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা কমে ১২ শতাংশ। আবার কলা, পাম ও পিচ খেলে ১১ শতাংশ
ঝুঁকি কমে। অনেক গবেষক বলছেন, কিশমিশ, খুবানি ও ইউরোপীয় ফল খেলে সামান্য ডায়াবেটিস
প্রতিরোধ করে।
আমাদের
দেশে কালোজাম ডায়াবেটিসের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু চিবিয়ে খেতে হবে বিচিসহ। এতে ঝুঁকি
কমবে ৩৩ শতাংশ আর আপেল ও নাশপাতি যদি চিবিয়ে খাওয়া হয়, তবে ঝুঁকি কমে ১৪ শতাংশ। কালোজাম
হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শ্রেষ্ঠ ফল। এর বিচি রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে কবিরাজ বা
হেকিমের পরামর্শ মোতাবেক খেলে দ্রুত ডায়াবেটিস কমে যায়।
তাই
গবেষকেরা পরামর্শ দেন, সবাই কালোজাম, আঙ্গুর, আপেল, নাশপাতি, কলা, খুবানি, কিশমিশ,
জাম্বুরা, টক বরই, আমড়া, টক কামরাঙা কামড়ে চিবিয়ে খেতে হবে। রস বা জুস বের করে পান
করা যাবে না। এতে ডায়াবেটিস টাইপ-২ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। সূত্র: হেলথ ম্যাগাজিন, নভেম্বর, ২০১৩।
No comments:
Post a Comment